আপনার কি রাতে ঘুম কম হয় ????
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ ও নানামুখি চাপের কারণে আমাদের অনেককেই ঘুমহীন রাত কাটাতে হয়। আর অনেকে এ নিয়ে মোটেও সচেতন নন। কিন্তু ঘুম কম হওয়ার ফলে অনেক ক্ষতিই হয়ে যেতে পারে। ড. সতিশ কাউলের মতে, কম ঘুম হলে তা শরীরকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। খুব সহজেই ক্লান্তি ভর করতে পারে এবং শরীরের হরমোনগুলো সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে।
জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুম কম হওয়ার লক্ষণগুলো কী কী-
চোখের নিচে কালচে দাগ, ক্লান্তি, বমিবমি ভাব, ভারী চোখ, চুল পড়ে যাওয়া, সকাল বেলা অলস বোধ করা। এ লক্ষণগুলো প্রতিদিন বা এক সপ্তাহ জুড়ে দেখা দিতে পারে। লক্ষণগুলো দীর্ঘস্থায়ী হলে আর অবজ্ঞা করা ঠিক হবে না।
কেননা কম ঘুম হলে-
হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হতে পারে।কম ঘুমের কারণে অবসন্নতা, যৌনতার প্রতি অনীহা, স্মৃতিশক্তি ক্ষয়, মনোযোগের অভাব এবং খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে।
এটি মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করে কাজের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এর ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যায়। ফলে স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি।
এবার জেনে নিন ঘুম বাড়ানোর উপায়গুলো-
শোবার ঘরের আলো নিয়ন্ত্রণ করুন : ঘুমের ক্ষেত্রে আলোর বিশেষ ভূমিকা আছে। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি ঘরের আলোর ব্যবস্থাকে ঘুম সহায়ক করে তুলতে পারেন।অন্ধকার শোবার ঘরকে পুরো অন্ধকার করে ফেলুন। শোবার ঘরকে অন্ধকার করতে ডিভিডি প্লেয়ারের মতো আলো বিচ্ছুরণকারী যন্ত্রগুলো বন্ধ করুন। দরজার নিচ দিয়ে আসা আলো বন্ধ করতে তোয়ালে ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে ভারী পর্দা ব্যবহার করুন। আপনি পাতলা ঘুমের অধিকারী হন, তবে যে কোনো আলো আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
বই পড়ুন : ঘুমের আগে টিভি বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলে তা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বই পড়া উল্টো কাজে দেয়। এটা মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে এবং ক্লান্ত হতে দেয় না।
হলুদ আলো জ্বালান : গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে হলুদ আলো ঘুম সহায়ক। ফলে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে ঘরে হলুদ ডিম লাইট জ্বালিয়ে রাখতে পারেন।
চাপ কমান : কাজের চাপের বড় কারণ সময়ে স্বল্পতা। শোয়ার আগেও আমাদের কাজ করতে হয়। কাজের পর বই পড়া, বন্ধু বা সঙ্গীর সাথে কথা বলা এবং দীর্ঘক্ষণ গোসল আপনাকে সহযোগিতা করতে পারে।
মেডিটেশন করুন : এটা সত্যিই কাজ করে। অনেকেই সকালে মেডিটেশন করেন, কিন্তু ঘুমের আগে মেডিটেশন ভাল ফল দিতে পারে।
ঘুমের আগে রুটিন মেনে চলুন : আমরা অভ্যাসের দাস। শরীরকে অভ্যাস করালে শরীর সে অনুসারে চলবে। ঘুমের আগে নির্দিষ্ট একটা রুটিন মেনে চলুন। ঘুমের এক ঘণ্টা আগে থেকে পড়া শুরু করতে পারেন, ঘরের আলো কমিয়ে খেতে পারেন হারবাল চা অথবা গোসল করে নিতে পারে। এগুলোর যে কোনো একটা বা সবগুলোই ট্রাই করতে পারেন।
ঘুমাতে যাবার তিন-চার ঘণ্টা আগে খাবেন : ঘুমের ঠিক আগে খাবেন না। ঘুমাতে যাবার আগে খাওয়া কোনো ভাল ব্যাপার নয়। এতে হজমে গোলমাল হয়। এর ফলে বিছানায় শুয়ে নির্ঘুম সময় কাটাতে হতে পারে। ঘুমের তিন চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান : শরীরে ঘুম আনে মেলাটনিন নামে এক হরমোন। কিন্তু অনেক সময়ই এ হরমোন সমৃদ্ধ খাবার আমরা খাই না। ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক ঘুমের ক্ষেত্রে সহায়ক। সবুজ শাকপাতা ও বাদাম জাতীয় খাবারে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। মাংসে জিংক সহ বিভিন্ন খনিজ থাকে।
কোন প্রশ্ন থাকলে ইনবক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ
0 Comments