জানেন কি বিছুটি পাতারও আছে রকমারি গুণ? জেনে নিন উপকারিতা
গায়ে লাগলে নাম ভুলিয়ে ছাড়ে| অথচ এই পাতার গুড়ো, তেল, চা নানাভাবে শরীর-ত্বক-চুলের দারুণ উপকার করে| আরো অনেক গুণ রয়েছে বিছুটি পাতার| জেনে নিন সেগুলি কী কী—
এক পাতার অনেক গুণ—
১. বিছুটি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ডি আর কে রয়েছে| যেগুলির অভাবে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়| এই পাতার মাধ্যমে ভিটামিনের অভাব আপনি সহজেই পূরণ করতে পারেন| এই উপাদানগুলি শরীরে anti tumar কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে|
২. ভিটামিনের পাশাপাশি নানা ধরনের মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ-ও রয়েছে এতে| যেমন, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, সিলিকোন, আয়োডিন, সিলিকন, সোডিয়াম, সালফার|
৩. বিছুটি পাতা মানেই প্রোটিন আর অ্যামিনো অ্যাসিডের আকর|
৪. স্নায়ুর সমস্যা দূর হবে বিছুটি পাতার চা খেলে|
৫. খালি পেটে নিয়মিত এই পাতার গুড়ো ঈষদুষ্ণ জলে মিশিয়ে খেলে গ্যাস, অম্বল কাছে ঘেঁষবে না|
৬. এই পাতার চা দিয়ে রোজ গার্গল করলে মুখ, গলার সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাবেন|
৭. বুকে কফ জমা, কাশি, নিউমোনিয়া সহ ফুসফুসের সমস্ত রোগ শত হস্ত দুরে থাকবে বিছুটি পাতার চা খেলে|
৮. এই পাতা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়| টেনসন কমাতে সাহায্য করে|
ত্বকের যত্নে—
মুখ মনের আয়না| তাই যত্ন না নিলে আয়না জেল্লায় ঝকঝকে হবে কী করে? তাই জেনে নিন এই পাতার রস বা তেল কী কী সমস্যা মেটায়—
১. ব্রণ কমায়: বিছুটি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে নিন| অল্প ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন| যাঁদের অয়েলি স্কিন, সারাক্ষণ ব্রণর হামলায় জেরবার তাঁরা স্নানের আগে ব্রণর ওপরে এই পেস্ট লাগিয়ে নিন| শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নেবেন| রোজ মাখলে ব্রণ, ফুসকুড়ির উপদ্রব তো কমবেই| ত্বকে কোনো অবাঞ্ছিত দাগ থাকবে না|
২. চর্মরোগ সারায়: এর মধ্যে থাকা অ্যাসট্রিনজেন্ট একজিমা, পোকার কামড়, পক্স কমাতে সাহায্য করে| তাই ডাক্তার বাবুরা একজিমা বা অন্যান্য চর্মরোগ কমাতে অনেক সময় পাতার তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন|
৩. সান বার্ন গায়েব: anti inflammatory প্রপার্টি থাকায় রোদে পোড়া ত্বক আরাম পায় এই পাতার তেল লাগালে| জ্বলুনি কমে| কালচে দাগ মুছে যায়|
বাহারি চুলের দেখভালে—
১. চুল পড়া কমাতে: অকালে চুল ঝরে গেলে বা পেকে গেলে কার মন ভালো থাকে? এই সমস্যা ঘরোয়া উপাদানে কমাতে চাইলে ব্যবহার করুন বিছুটি পাতার তেল| আপনার রোজের হেয়ার অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন রোজ| ভিতর থেকে কমাতে চাইলে রোজ এই পাতার চা খান|
২. চুল ঘন করতে: এই পাতার মধ্যে থাকা সিলিকন ও সালফার চুল ঘন করতে এক এবং অদ্বিতীয়| চুলের জেল্লা বাড়াতে চাইলে এক মগ জলে এই পাতা ফুটিয়ে, ছেঁকে, ঠান্ডা করে শ্যাম্পু করার পর মাথায় ঢেলে নিন|
৩. খুসকি তাড়াতে: যাঁরা নাচর খুসকির জ্বালায় জেরবার তাঁরা এই পাতার তেল সরষে বা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে সারা রাত মাথায় মেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন| চাইলে এই পাতার রসও স্ক্যাল্পে মাসাজ করে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন|
অনেক রোগের এক দাওয়াই—
১. বাতের ব্যথায় কুপোকাত? গাঁটে, হাতে-পায়ে বিছুটি পাতার রস বা তেল ঈষদুষ্ণ অবস্থায় রোজ মালিশ করুন| ব্যথা পালাতে পথ পাবে না| একই ফল মিলবে রোজ এই পাতার চা খেলে|
২. এই পাতার চা ইউরিনারি সংক্রমণ কমায়|
৩. হাঁচি-কাশি-সর্দি-আস্থেমা ছাড়াও এলার্জি কমাতে সাহায্য করে|
৪. এই পাতার চা রোজ সকালে বিকেলে খেলে স্ত্রীরোগে কম ভুগবেন মেয়েরা। তাই অনেক ডাক্তার মাসিকের পরে এই পাতার তৈরি ক্যাপসুল বা চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
0 Comments