সর্দি-কাশিতে মধু অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে বেশী কার্যকরী!!!
সামান্য সর্দি- কাশি হলেই এন্টিবায়োটিক খেতে অভ্যস্ত অনেকে। কিন্তু আধুনিক গবেষণা বলছে অন্য কথা। সর্দি-কাশিতে অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে কার্যকরী মধু । মধুকে যা ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) ওষুধের চেয়ে ভালো বলছে খোদ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল এবং প্রাইমারি কেয়ার হেলথ সায়েন্সের নফিল্ড বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, ঠাণ্ডা ও ফ্লু জাতীয় অসুস্থতার লক্ষণগুলো দূর করতে মধু সাধারণত বাণিজ্যিক ওষুধের চেয়ে বেশি কার্যকর ছিল এবং এটা অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে নিরাপদ, সস্তা ও আরো সহজলভ্য বিকল্প হতে পারে।
প্রমাণভিত্তিক মেডিসিন জার্নাল বিএমজেতে তারা লিখেছেন, ইউআরটিআইয়ের লক্ষণগুলো উপশমের জন্য মধু স্বাভাবিক যত্নের চেয়ে বেশি কার্যকর। এটি অ্যান্টিবায়োটিকের সস্তা বিকল্প হতে পারে। মধু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের বিস্তারকে ধীর করার প্রচেষ্টাগুলোতে সহায়তা করতে পারে। তবে এটা ভালোভাবে বুঝতে আরো উচ্চমানের প্লাসিবো নিয়ন্ত্রিত গবেষণা প্রয়োজন।
গবেষকরা ১৪টি গবেষণার ফলাফল সংকলন করেছেন, যার মধ্যে ৯টিতেই শিশুরা অংশ নিয়েছিল। গবেষণাগুলোতে ওটিসি ওষুধের মতো প্রচলিত চিকিৎসার সঙ্গে মধু তুলনা করা হয়।
গবেষকরা অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার পরিবর্তে রোগীদের এটার পরামর্শ দেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে চিকিৎসকদের উৎসাহিত করেছিলেন। মধুর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকলেও অ্যান্টিবায়োটিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং অতিরিক্ত ব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণ হতে পারে।
বহু বছর আগে থেকেই মধু কাশির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, তবে সাধারণ অসুস্থতাগুলোর চিকিৎসায় মধুর কার্যকারিতা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
বিদ্যমান প্রমাণগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। মধু সেবনে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনগুলো (ইউআরটিআই) কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটা তারা নির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন। ইউআরটিআই হলো ঠাণ্ডা জাতীয় অসুস্থতা, যা নাক, সাইনাস, ফ্যারিক্স ও স্বরযন্ত্রকে প্রভাবিত করে।বেশিরভাগ ইউআরটিআই ভাইরাল সংক্রমণ হওয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর ও অনুপযুক্ত। তবে কার্যকর বিকল্পের অভাব এবং রোগী-চিকিৎসকের সম্পর্ক সংরক্ষণের ইচ্ছা উভয়ই অ্যান্টিবায়োটিকের ওভার-প্রেসক্রিপশনে ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলো অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করছে। ২০১৮ সালে তারা বলেছিল, ওভার-প্রেসক্রিপশনের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব হ্রাস (জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকারিতা হারালে) পেলে লাখ লাখ সার্জিক্যাল চিকিৎসা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়া পূর্ববর্তী গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মধুর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটা ই. কোলাই ও সালমোনেলাসহ ব্যাকটেরিয়ার কয়েক ডজন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কার্যকর।
১৩৯টি শিশুর ওপর পরিচালিত অপর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাশির চিকিৎসায় জনপ্রিয় ওষুধ ডেক্সট্রোমেথোর্ফান ও অ্যান্টিহিস্টামিন ডিফেনহাইড্রামাইন উভয়ের চেয়ে মধু রাত্রীকালীন কাশি নিরসনে এবং ঘুমের উন্নতির জন্য অধিকতর ভালো কাজ করে।
*সংগৃহীত
0 Comments