স্বীকারোক্তি_মমতা ব্যানার্জী সুব্রত পাল
বেশ কয়েকদিন যাবৎ গভীর চিন্তাভাবনা করে অবশেষে স্বিদ্ধান্ত ,আর তারই ফলস্বরূপ এই 'স্বীকারোক্তি _ মমতা ব্যানার্জি' কলমের ডগায়। একজন মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে কিছু লিখতে গেলে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তার দরকার হয়। কারণ তিনি যতই হোক ,আর ক 'জনের মতো নন। শুধু তাই ই নয় ,তিনি হলেন একজন প্রশাসক ,তিনি হলেন শাসনের অধিকারী একজন ব্যক্তি ,যিনি একটি রাজ্যের প্রধান ও পরিচালক। আর আমি এমন একজন মুখ্যমন্ত্রীর কথা লিখছি যিনি আমার রাজ্যের অভিভাবিকা তথা সুচিন্তক। আমি যতই লিখছি ততই গর্ববোধ হচ্ছে মনে মনে। কলমের কালি যেন দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে খাতার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। সত্যি কথা বলতে কি আমি অবশেষে স্বীকার করতে বাধ্য হলাম She is the best among the all ।তাই আমার স্বীকারোক্তি লেখাটি উৎসর্গ করলাম মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও আমাদের রাজ্যের প্রধান দিদি তথা মমতা ব্যানার্জী কে।
আজ থেকে প্রায় অনেক বছর আগের কথা। তখন পুরোদমে সিঙ্গুর এ অনশন চলছে দিদির। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন মানুষ ছুটে চলেছেন দিদির ডাকে। ঠিক আমাদের এলাকা থেকেও একটি বাস ও কয়েকটি গাড়ি ভাড়া করে দিদির ডাকে সাড়া দিতে বেরিয়ে পড়লাম। আমি একটি টাটা সুমো গাড়ি করে বেশ কয়েকজন নেতাদের সাথে চললাম। আর বাসে করে আমাদের প্রতিবেশী ,গ্রামের মানুষ জন সকলে একসাথে যেতে থাকলাম মনের আনন্দে অতো লোক একসাথে যাচ্ছি সে যে কি অনুভূতি লিখে প্রকাশ করতে পারবো না। মাঝে মাঝে আমি কল্পনার জগতে ভাবি এখনও। প্রচন্ড বেগে গাড়ি ছুটে চলেছে ,হটাৎ করে বেশ কিছুজন মানুষ আমাদের পথ আটকায়। বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়নি যে তাঁরা নিশ্চয় আমাদের পথের বাধা এবং অন্য দলের লোক। বেশ কিছু দূর আগে থেকেই গাড়ির চালক অন্য রাস্তা দিয়ে ঝড়ের বেগে এগিয়ে যেতে লাগলেন। যত এগিয়ে যাচ্ছি গুলির শব্দে কান ফেটে যাচ্ছে। এতক্ষনে বুঝতে পারছি রাজনীতি কি জিনিস। মরি কি বাঁচি যেভাবেই হোক আমরা যাবো। কিছু ক্ষণ পর দেখি রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে আমাদের কারা যেন পথ আটকালো। গাড়ি থামিয়ে ,গাড়ি থেকে নেমে যে যেদিকে পারছে সেকি ছুট ,বাপরে বাপ্ !আমি তো জি.টি। রোড ধরে প্রানপনে ছুটছি আর দেখছি আমার পিছনে কেউ আছে তো নাকি। আমাদের সাথে সাথে পিছনের গাড়িতে আসছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ মহাশয়। তিনি সাদা পাতলুম আর পাঞ্জাবী পরে আমারই মতন গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা ধরে ছুটছেন। আমার এখনও স্বপন দেবনাথ বাবুর ছোটা টা মনে পড়লে হাসির উদ্রেক হয়। এভাবেই কিছুটা যাবার পর দেখি আমাদের চালক আমাদের গাড়িটা অন্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে গিয়ে সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। আমি তো গাড়িটা দেখে সোজা ভিতরে ঢুকে পড়লাম। আবার সবাই যখন এসে পৌঁছালো তখন গাড়ি এগিয়ে চললো সিঙ্গুরের উদ্যেশ্যে। কিছুক্ষন যাবার পর দিদির সভার মাইকের আওয়াজ কানে এসে পৌঁছালো। এতক্ষনে যেন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস।প্রায় দুপুর ১টার দিকে পৌঁছালাম প্রচুর মানুষের সমাগমে সভাস্থল যেন মেলার প্রাঙ্গণ। পৌঁছেই দেখছি একজন ব্যক্তি মাক্রোফোন হাতে নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। আর তাঁর দিকে সবাই তাকিয়ে আছেন। সামনে বেশ কিছু চেয়ারের ব্যাবস্থা থাকলেও বহু মানুষের সমাগমে একটাও খালি নেই। আমি আর আমার গ্রামের একজন নেতা কিছুটা সামনে এগিয়ে সব কিছু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কিছুক্ষন পর আমি আর ওই ব্যক্তি সোজা মঞ্চে উঠে গেলাম। মঞ্চে তখন বসে আছেন পার্থ বাবু ,মদন বাবু ,আরো অনেকে ছিলেন সকলকে মনে করতে পারছি না। আমি মঞ্চের ওদেরই পাশে বসলাম। সে কি অনুভূতি !পায়ের ওপর পা তুলে সেকি না মজা। আর আমাদের এলাকা থেকে যাঁরা গেছেন তাঁরা দেখছেন আমাদের। কেউ কেউ দেখছি সামনের সারিতে চেয়ারে বসে আছে ,কেউ আমাদের দিকে তাকিয়ে বলছে কি যেন ,কেউ কেউ মনে মনে হিংসা করছে আর আমি তো ওপরে বসে পা নাচাচ্ছি। ওদের দেখে কখনো কখনো আমার পা যেন অটোমোটিক বেশি দুলে যাচ্ছে।মঞ্চে অধীর অপেক্ষায় বসে আছি কখন একবার দিদিকে দেখবো। মাঝে মাঝে এইদিক ওইদিক তাকাচ্ছি ,দিদি কোথাও আছেন কিনা। একজনের কাছ থেকে জানতে পারলাম দিদি নাকি ভিতরে আছেন। খুব ক্লান্ত থাকায় কিছুক্ষন বিশ্রাম নিচ্ছেন। হয়তো এখুনি এসে পড়বেন। মঞ্চে তখন বসে নিজেকে বেশ বড়ো বড়ো লাগছিলো। কেনই বা হবে না যে মঞ্চে বসে আছি সেই মঞ্চে দিদি আছেন। হটাৎ দেখি সাদা শাড়ী পরে হাতে একটা রুমাল নিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে কে যেন এতো দ্রুত এলো চোখের পাতাও বুঝতে পারিনি। বেশ চমকিয়ে গেলাম এভাবে দিদির হটাৎ দেখা পেয়ে।হাঁ মঞ্চে এলেন দিদি -মমতা ব্যানার্জী। মাইক্রোফোন টা হাতে নিয়ে বললেন,সকলেই শান্ত হন ,এবং রোদ থেকে সরে যত টা পারেন সামনের দিকে চলে আসার চেষ্টা করুন। দিদি যেখানে বক্তৃতা দিচ্ছেন সেখান থেকে আমি চার কিংবা পাঁচ ফুট দূরে চেয়ারে বসে আছি। কি যে আনন্দ হচ্ছিলো ,কি যে ভালো লাগছিলো ,সে এক দারুন অনুভূতি। আমার খুব ভালো মনে আছে তখন রমজান মাস চলছে। প্রচুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এসেছেন। আর আসবেন এটা ধরে নিয়ে তাঁদের রোজা খোলার যাবতীয় ব্যাবস্থা করে রেখেছিলেন তিনি।কিছুক্ষন পর দিদির কাছে এগিয়ে আশীর্বাদ নিলাম। আমার এখনো তাঁর কথাটা কানে বাজে। কি নাম তোমার ?কোথায় থাকো ?আর শেষে বললেন ভালো থাকবে আর ভালো করে পড়াশুনা করবে। ব্যস এইটুকু বলেই শুরু করে দিলেন তাঁর কথা জনগণের উদ্যেশ্যে। বক্তিতার মাঝে হটাৎ করে আজানের করুন আওয়াজ এসে পৌঁছালো। অমনি সঙ্গে সঙ্গে মাইক বন্ধ করে সকলকে রোজা খোলার জন্য তিনি অনুরোধ করলেন। উনি শান্ত ভাবে সকলকে বললেন ,সব কিছু ব্যাবস্থা করে রাখা হয়েছে। আপনারা কেউ চিন্তা করবেন না। আপনারা সুশৃঙ্খল ভাবে একত্রিত হয়ে সকলে একসাথে রোজা খুলুন ,যাঁরা পিছনে আছেন তাঁরা সকলেই মঞ্চে চলে আসুন। এখানেই আপনারা রোজা খুলবেন। এই কথা বলা মাত্রই আমার কিছু বন্ধু এক লাফে মঞ্চে। আমার এখনো মনে পরে সেইসব কথা। যতই হোক দিদি ডেকেছেন। সেই সুযোগ কি কেউ হাত ছাড়া করে।কি অসম্ভব ধৈয্য আর কি সাংঘাতিক মনোবল সেটা উনার কাছ থেকে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। একবার এইদিক একবার ঐদিক ঘুরে ঘুরে কারোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না তার যে তদারকি সেটা নিজের চোখে দেখেছি। তিনি যেন কাউকে আড়াল হতে দেবেন না। যাইহোক মঞ্চে বসে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন রোজা খুলে পুনরায় শুরু হলো দিদির ভাষণ। হটাৎ দেখি প্রচন্ড গুলির শব্দ। কান যেন ফেটে যাচ্ছে। মৃত্যু যেন খুব কাছ থেকে ডাকছে। বাতাসে বারুদের গন্ধে ততক্ষনে বুঝে গেছি খুব বিপদ আসন্ন। চারিদিকে প্রাণপণ নিয়ে সকলে ছুটে চলেছে। যে যেদিকে পারছে ছুটছে। যমরাজ যেন দ্রুত এগিয়ে আসছে। দিদি কিন্তু মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলে চলেছেন ,আপনারা ছোটাছুটি করবেন না ,আপনার অযথা ভয় পাবেন না। ওঁদের সাহস নেই তাই আড়াল থেকে হুমকি দিচ্ছে। বেশ খানিকটা ভিড় কেটে গেলো গুলির শব্দে। সূর্যমামা ও আস্তে আস্তে যেতে বসেছে। আমরাও একে অপরকে খুঁজছি। গাড়িটাও দেখছি না ,বিপদ যেন পদে পদে। অবশেষে সকলে একত্রিত হয়ে গাড়ি করে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্যেশ্যে। তবু যেন বুকে ভয় ,আর প্রাণ সংশয় এভাবেই আস্তে আস্তে গাড়ি গড়াতে শুরু করলো। দিদি তো যা করেছেন বা করছেন তা নিশ্চয় একটা খাতা বা পেন যথেষ্ট নয়। আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না কিন্তু দিদির সাথে সাক্ষাতের পর আমি নিঃসন্দেহে তাঁকে একজন মহান যোদ্ধা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারি না। তিনি হলেন স্বাধীন ভারতের একজন সফল যোদ্ধা। যিনি নিজে কখনো নিজের জীবনের কথা ভাবেন নি। ভাবেনি নিজের পরিবার নিয়ে ,ভাবেননি নিজের শখ ,আহ্লাদ নিয়ে। তিনি শুধু বলতেন আমি বদলা নয় ,বদল চাই। সত্যি করেই তিনি বদল করে ছেড়েছেন যা কল্পনাতীত। নিজের চোখে তাঁর বেশভূষা দেখে স্তম্ভিত এবং অভিভূত। তাঁর পরনে সাদা শাড়ী, যেন হলেই হলো আর পায়ে হাওয়াই চটি তাঁকে চিনবার শ্রেষ্ঠ উপায়। এতেই তিনি এতো জনপ্রিয়। তিনি সারা ভারতের গর্ব। তিনি এতো ব্যস্ত মানুষ যে শাড়ীর আঁচলে ঘাম মুছতে মুছতে চিতা বাঘের ন্যায় দৌড়াতে অভস্ত। আমি হলফ করে বলতে পারি তাঁর মতো এতো দ্রুত হাঁটা কোনো প্রতিযোগিতাতেও হয়না। সকলে যেন তাঁকে নিয়ে চিন্তিত এবং বাত্যিবাস্ত। আসলে তাঁর সময়ের বোরো অভাব। তিনি সময় অপচয়কারীকে ভালোবাসেন না। একধারে তিনি যেমন সাহসিনী অপরদিকে তিনি তেমনই রাগিনী। যদি তাঁর পিছনের ইতিহাস তা পড়ে দেখেন তাহলে সাহসিকতার এবং ধৈয্যের পরিচয় অনায়াসে পেয়ে যাবেন। তিনি আজও লড়ছেন আর আমার বিশ্বাস তিনি আগামী দিনেও লড়ে যাবেন। কেউ তাঁকে আটকাতে পারবে না। কারণ তিনি জানেনআমি কলম ধরেছি বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য। আর আমার এই লেখা দিদিরই মতো আটকে রাখা যাবে না। আমি একজন মানুষের সম্পর্কে লিখছি যিনি একজন আদর্শের ,যিনি একজন সততার প্রতীক। যাঁকে দেখে আপনি একটু শক্তি সঞ্চয় করতে পারবেন। তাঁর মতো মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের চোখে ও এতো কাছ থেকে দেখে আর কিছু না হোক নিজেকে ধন্য তো মনে করতে পারি। আজ আমাদের রাজ্য কতদূর গেছে তা নিশ্চয় সকলের জানা। গোটা বিশ্বের মানুষ আজ আমাদের রাজ্যের নাম নিয়ে আলোচনা করছে ,প্রশংসা করছে ,মডেল করছে। আর এইসবের পিছনে রয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। তিনি যা করছেন বা করে চলেছেন তা নিঃসন্দেহে স্বপ্নাতীত। দিন রাত তিনি ভেবে চলেছেন কিভাবে সম্ভব মানুষের উন্নতি ,কিভাবে মানুষের কল্যাণ করা যায় ,আর তাই তাঁর কথা না লিখলে লেখক হিসাবে নিজেকে ছোটো মনে হবে। মমতা ব্যানার্জীকে আটকে রাখা সম্ভব নয় । তিনি লড়ে যাবেন শুধু আমাদের জন্য। তিনি লড়ে যাবেন দেশের জন্য। যেদিন তিনি প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি বলছিলেন আমরা বদলা নয় ,আমরা বদল চাই। সে কথা আমরা কেউ ভুলে যায়নি। আজ আমরা বাস্তবটা দেখছি ,তাঁর উন্নয়ন দেখছি। একটা কথা বলে রাখি আমি কোনো রাজনৈতিক দল কে সাপোর্ট করি না আর তাই আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ও নয়। আমি কারোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই লেখা লিখি নাই। আমি ওইসব রাজনীতির জীবন থেকে সরে থাকতে চাই কারণ আমারও দিদির মতো সময় বড়ো কম ,আমার পেশাগত কাজ শেষ করে যেটুকু সময় বাঁচে তা আমি বিভিন্ন ধরণের লেখালিখি করে আনন্দ লাভ করি।একজন অভিভাবক যেমন একটি পরিবারের মাথা ঠিক তেমনি একজন মুখ্যমন্ত্রী হলেন একটি রাজ্যের অভিভাবক। যদি পরিবারের অভিভাবকের একটি সুনিদিষ্ট চিন্তা ভাবনা থাকে ,পরিকল্পনা থাকে আর সেই সঙ্গে ধৈয্য থাকে নিশ্চয় সেই পরিবার সফল হবে দেরি হলেও। মমতা ব্যানার্জী তাই সফলতার শীর্ষে। কারণ তাঁর মধ্যে এই সবকটিই বিরাজমান। তিনি আজ পযন্ত যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন তার একটাও বিফলে যায়নি। শুধু তাই ই না তাঁর পরিকল্পনা বিভিন্ন রাজ্যের মডেল হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। বাংলার বহু পরিকল্পনা এখনো প্রতিটি রাজ্যে আলোচিত বিষয়ের একটি। আর একজন মানুষের এতো পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন তখনই সম্ভব হয় যখন তার মধ্যে থাকে সততা ,নিষ্ঠা আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে বিদেশের বিভিন্ন চিন্তা ধারা কে তিনি আমাদের বাংলায় বাস্তবায়ন করছেন। তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিভাবে মানুষের উন্নতি সম্ভব ,কিভাবে মানুষের বিকাশ করা যায় ,ভালো করা যায়। কিভাবে বাংলা কে শ্রেষ্ঠ বানানো যায়। ধৈয্য আর সততা দিয়ে তিনি বারবার দেখিয়ে দিয়েছেন একটা সৎ মানসিকতা ও সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা থাকলে সফল হওয়া যায়। মমতা ব্যানার্জী ই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।আজ পর্যন্ত এমন কোনো মানুষ দেখেছেন যিনি নিজের কথা না ভেবে দেশের কথা ভেবে ,বাংলার কথা ভেবে নিজেকে সকলের তরে বিলিয়ে দিয়েছেন। কি সাংঘাতিক ও বিচক্ষণ মানুষ সেগুলো তাঁর পরিককল্পনা গুলো ঘাঁটলে বোঝা যায়। এমন একটা পরিকল্পনা আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি যার কোনো ভবিষৎ দেখা যায় নি। আমি মাঝে মাঝে তাঁর কথা ভেবে হারিয়ে ফেলি। তিনি তো আমাদেরই মতো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। এতো বুদ্ধি ,চিন্তা ,বিশ্লেষণ একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব হলেও কিভাবে সব সফল সম্ভব। তিনি নিশ্চই অসাধারণ আর সৎ মানসুইকটা ও সততা তাঁকে শ্রেষ্টত্বের আসনে বসিয়েছে। সব থেকে অবাক লাগার একটা কথা বলি। আমি প্রায় টেলিভিশনে তাঁর বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান থাকলে রিমোট হাতে নিয়ে বসে পরি।এমনিতেই রিমোট হাতে পাওয়া বিশাল ব্যাপার কেননা ষ্টার জলসা আছে। কারণ ষ্টার জলসা বাড়ির বৌ ,মা,বয়স্ক দের প্রায় সিরিয়াল দেখিয়ে নিজেদের কব্জায় করে রেখেছে। ভাত পুড়ে যাক ,ছেলে গোল্লায় যাক রিমোট কিন্তু হাত ছাড়া করা যাবে না। যাইহোক ,একদিন টেলিভিশনে দেখছি দিদি কোন এক জেলায় জেলা সফর করছেন। আর দিদি যে জেলায় যাবেন সেই জেলার কাক ,পক্ষিও প্রস্তুত থাকে নিজের নিজের কৃতকর্মের জন্য। কি যে জিজ্ঞাসা করবেন কি জানি।সবাই যেন মনে মনে ভাবছে কি আছে। কি ছিলো আর কি বাকি। বাপরে বাপ্। এই যে এলো বলে। মরি কি বাঁচি। কেউ কেউ তো হিসাবের খাতা টা চাপের মুখে কোথায় রেখেছে মনে করতে পারছে না। এইসব অবস্থা হয় আর কি। আমি যখন টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখলাম ,দেখছি দিদি এক ধার থেকে হিসাব নিচ্ছেন। আমি কয়েকটা উদাহরণস্বরূপ বলছি। অর্থাৎ কাকে কি রকম ধমক দিচ্ছিলেন বুঝতে পারবেন। দিদি বলছেন। এই যে সৌমেন তোমার ওই কাজটার খবর কি ?সঙ্গে সঙ্গে সৌমেন বাবু উঠে দাঁড়ালেন। দিদি আবারো বললেন তোমার ওই কাজ টা তিন মাস লাগার কথা নয়। তোমাকে কাজটা দেওয়া হয়েছে জুন মাসে। এক মাসের মধ্যেই হয়ে যাবার কথা। আমার কাছে যা খবর আছে কাজটার অর্ধেকও হয়নি। দেখো এইভাবে কাজ করলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে.বাচ্ছা গুলোর পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। সেটা কি তোমার মাথায় আছে। কাজ টা ছিলো একটা বিদ্যালয় মেরামতের কাজ। তিনি আরো বললেন যদি তোমার পক্ষে সম্ভব না হয় ছেড়ে দাও।তোমার গাফিলতির জন্য ওই বাচ্ছা গুলোকে আমি বিপদে ফেলতে পারি না। আমি দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজের সম্পূর্ণ বিবরণ চাই। বিশ্বনাথ বাবু আপনি একটু ব্যাপার টা দেখুন তো। এবার শুভঙ্কর বাবু আপনার এলাকাতে একটি রাস্তা নিয়ে কিছুদিন আগে খুব ঝামেলা হয়েছিল। আমি তো টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। কাজটার খবর কি ?বিশ্বনাথ বাবু বলে উঠলেন ম্যাডাম কাজ টা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। আমি বি. ডি. ও.সাহেবের কাছে সমস্ত নথিপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। খুব ভালো,বি.ডি.ও. তো আমাদের দীপঙ্কর বাবু তাই না। দূর থেকে দীপঙ্কর বাবু উঠে দাঁড়ালেন। দিদি বললেন দীপঙ্কর বাবু আপনি একটি বিস্তারিত দেখে নিয়ে ওদের টাকা টা মিটিয়ে দিন আর আমাকে একটা রিপোর্ট পাঠান সাত দিনের মধ্যে। সকল কে বলছি আপনারা কাজ ফেলে রাখবেন না। মানুষের কোনো ক্ষতি বা অসুবিধা যেন না হয়। এইভাবে তিনি প্রতিটি এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত মানুষের নাম মনে রেখে তাঁদের কাজ সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকেন। যা এক কথায় অনবদ্য।
Mamata Banerjee Lekha Kobita
Friends if you like this post,kindly comment bellow and do share your responce.Thank You for Visiting
0 Comments