কানের সংক্রমণ সারাতে ঘরোয়া চিকিৎসা
কানের
ছিদ্র পথে কোনও সংক্রমণ হলে তাকে চিকিৎসা পরিভাষায় সুইমার'স ইয়ার বলা হয়। সাধারণত
কানে ভিতরে জল জমে এই সংক্রমণ হয় বলে এই রোগকে এমন নামে ডাকা হয়ে থাকে। অনেকেই
পুকুর বা সুইমিং পুল থেকে স্নান করে ওঠার পর ভালো করে কানের ভেতরটা মোছেন না, ফলে জল জমতে জমতে এক
সময় তা থেকে সংক্রমণ দেখা দেয়। প্রসঙ্গত, এই রোগ যে কেবল মাত্র
সাঁতারুদেরই হয়, এমনটা
ভেবে নেবেন না। এই ধরনের সংক্রমণে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।
কী
কী কারণে এই রোগ হয়:
কানের
ভিতরে ব্য়াকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের সংক্রণমের কারণেই এই রোগ হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে
হিয়ারিং এড ব্য়বহার করলে, অযথা বারংবার কান পরিষ্কার
করলে এবং কানের ভিতরে একজিমা হলেও এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। সর্বোপরি, যারা
খুব গরম আবহাওয়ায় থাকেন অথবা ড্রাই স্কিনের সমস্য়া আছে, তাদেরও
সুইমার'স ইয়ার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রসঙ্গত, একবার এই ধরনের সংক্রমণ হলে
যে দ্বীতিয়বার হবে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই
কিন্তু।
লক্ষণ:
এই
ধরনের সংক্রমণ হলে প্রচণ্ড কান চুলকাবে। সেই সঙ্গে কানে ব্য়থা এবং পুঁজ বেরনোর
মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে কান ফুলেও যেতে পারে। এক্ষেত্রে জেনে
রাখা ভালো যে এই ধরনের সংক্রমণ মোটেই ছোঁয়াছে নয়। এইসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের
পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। তবে এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আছে যা এই ধরনের সংক্রমণ
কমাতে দারুন কাজে আসে।
ঘরোয়া
পদ্ধতি:
১.
গরম সেক দিতে হবে:
যদি
দেখেন কান থেকে খুব পুঁজ বেরচ্ছে তাহলে বারে বারে গরম সেক দিন। এমনটা করলে পুঁজ
বেরিয়ে গিয়ে ব্য়থা কমে যাবে। গরম জলে এখটা সুতির কাপড় চুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে
নিন। তারপর সেটা দু মিনিট কানের উপর রাখুন। তারপর মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে পুঁজটা বার
করে দিন। এমনটা ১০ মিনিট ধরে করুন।
২.
সাদা ভিনিগার:
এই
রোগ সারাতে সাদা ভিনিগার দারুন কাজে দেয়। আসলে এই ধরনের ভিনিগারের মধ্য়ে
অ্যাসিডিক এলিমেন্ট থাকায় এটি ক্ষতিকর ব্য়াকটেরিয়াদের মারতে দারুন কাজে আসে। একটি
পাত্রে অ্যালকোহলের সঙ্গে এই ভিনিগার মেশান। তারপর সেই মিশ্রন থেকে কয়েক ড্রপ
নিয়ে কানে দিন। অল্প সময়ের মধ্য়েই দেখবেন আরাম পাবেন।
৩.
রসুন:
এতে
অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ থাকায় সংক্রমণের জন্য় দায়ী জীবানুগুলিকে মারতে এটি
দারুন কাজে আসে। দু চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েকটি রসুনের কোয়া মিলিয়ে তেলটিকে
কিছুক্ষণ গরম করুন। তারপর ঠান্ডা করে কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল কানে দিন। ভালো ফল
পাবেন। প্রসঙ্গত, ইচ্ছা হলে কাঁচা রসুনও খেতে
পারেন।
৪.
পেঁয়াজ:
এটি
ডিসইনফেকটেন্ট হওয়ায় এই ধরনের রোগ সারাতে দারুন কাজে আসে। পেঁয়াজ থেকে তার রস বার
করে কয়েক মিনিট গরম করুন। তারপর সেটি কানে দিলে দেখবেন জমে থাকা পুঁজ কেমন বেরিয়ে
আসে। আর একবার পুঁজ বেরিয়ে গেলেই দেখবেন যন্ত্রণা কমে গেছে।
৫.
হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড:
সুইমার'স
ইয়ারের মতো রোগ সারাতে আর একটি কার্যকরী ঘরোয়া চিকিৎসা হল হাইেড্রাজেন
পারঅক্সাইড। এটি কানের ভিতরে জমে থাকা পুঁজ শুকিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে সংক্রমণের
প্রভাব কমিয়ে রোগও সারিয়ে তোলে। যে কানে সংক্রমণ হয়েছে তাতে ৩ শতাংশ হাইড্রোজেন
পারঅক্সাইড দিন। তারপর কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে কান থেকে পুঁজ বার করে দিন। দিনে
কয়েকবার এমনটা করলেই দেখবেন রোগ সারতে শুরু করে দিয়েছে।
0 Comments